Header Ads

Header ADS

গোসল এর মাসলা মাসায়েল


গোসল এর মাসলা মাসায়েল, ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, কারন

গোসল ফরয হওয়ার কারণ সমূহ নিম্নরূপঃ
)     জাগ্রত বা নিদ্রা অবস্থায় উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত হওয়া কিন্তু নিদ্রা অবস্থায় উত্তেজনার অনুভব না হলেও গোসল করা ফরয কেননা নিদ্রা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে মানুষ অনেক সময় তা বুঝতে পারে না
)     স্ত্রী সহবাস সহবাসের ক্ষেত্রে স্ত্রীর যৌনাঙ্গে পুরুষাঙ্গের সর্বনিম্ন আগাটুকু প্রবেশ করালেই গোসল ফরয হয়ে যাবে
কেননা প্রথমটির ব্যাপারে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
পানি নির্গত হলেই পানি ঢালতে হবেমুসলিম, অধ্যায়ঃ হায়েয, অনুচ্ছেদঃ পানি নির্গত হলেই পানি ঢালা হা ৩৪৩
অর্থাৎ বীর্যের পানি নির্গত হলেই গোসল করতে হবে
আর দ্বিতীয় কারণের ব্যাপারে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
إِذَا جَلَسَ بَيْنَ شُعَبِهَا الْأَرْبَعِ ثُمَّ جَهَدَهَا فَقَدْ وَجَبَ الْغَسْلُ
স্ত্রীর চার শাখার (দুহাত দুপায়ের) মাঝে বসে, তার সাথে সহবাসে লিপ্ত হলেই গোসল ফরয হবেবুখারী, অধ্যায়ঃ গোসল, অনুচ্ছেদঃ উভয় লিঙ্গ মিলিত হলে করণীয়, হা/ ২৯১ মুসলিম, অধ্যায়ঃ হায়েয, অনুচ্ছেদঃ পানি ঢালার সম্পর্ক পানি নির্গত হওয়ার সাথে হা/ ৩৪৮
যদিও বীর্যপাত না হয়
বিষয়টি অনেক মানুষের জানা নেই অনেক লোক স্ত্রী সহবাসে বীর্যপাত না করলে অজ্ঞতা বশতঃ সপ্তাহ মাস কাটিয়ে দেয় গোসল করে না এটি মারাত্মক ধরণের ভুল জন্য আল্লাহ তাঁর রাসূলের শরীয়তের সীমারেখা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ফরয
অতএব উল্লেখিত হাদীছের ভিত্তিতে, সহবাস করে বীর্যপাত না হলেও গোসল করা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর ফরয
)     নারীদের ঋতু বা নেফাস (সন্তান প্রসোবত্তোর স্রাব) হওয়া ঋতুবতী নারীর স্রাব বন্ধ হলে, গোসলের মাধ্যমে তাকে পবিত্র হতে হবে এই গোসলও ফরয গোসলের অন্তর্ভূক্ত কেননা আল্লাহ্ বলেন,
يسألونَكَ عَنْ الْمَحِيْضِ قُلْ هُوَ أذىً فَاعْتَزِلُوْا النِّسَاءَ فِيْ الْمَحِيْضِ وَلاَ تَقْرَبُوْهُنَّ حَتَّى يَطْهُرْنَ، فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوْهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللهُ، إنَّ اللهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيْنَ وَ يُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِيْنَ
অর্থাৎতারা তোমার কাছে জিজ্ঞাসা করে হায়েয ¤পর্কে বলে দাও, এটা অপবিত্র কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রী মিলন থেকে বিরত থাক তখন পর্যন্ত তাদের সাথে সহবাসে লিপ্ত হবে না; যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায় যখন উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমণ কর তাদের কাছে যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন নিশ্চয় আল্লাহ্ তওবাকারী এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন”  (সূরা বাক্বারা- ২২২)
তাছাড়া নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইস্তেহাজা বিশিষ্ট নারীকে নির্দেশ দিয়েছেন, ঋতুর নির্দিষ্ট দিন সমূহ সে বিরত থাকবে তারপর গোসল করবে নেফাস থেকে পবিত্র হওয়ার ক্ষেত্রেও অনুরূপ বিধান তার উপরও গোসল করা ফরয
হায়েয নেফাস থেকে গোসল করার পদ্ধতি নাপাকী থেকে গোসল করার পদ্ধতির অনুরূপ তবে বিদ্বানদের মধ্যে কেউ ঋতুবতীর গোসলের সময় বরই পাতা ব্যবহার করা মুস্তাহাব বলেছেন কেননা এতে অধিক পরিস্কার পবিত্র হওয়া যায় বরই পাতার বদলে সাবান বা শ্যম্পু ব্যবহার করলেও উক্ত উদ্দেশ্য হাসিল হয়
বিদ্বানদের মধ্যে কেউ কেউ মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়া ফরয বলে উল্লেখ করেছেন দলীল হচ্ছে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কন্যা যয়নবকে যারা গোসল দিচ্ছিলেন, তিনি তাদেরকে বললেন:
اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ إِنْ رَأَيْتُنَّ ذَلِكَ
যয়নবকে তিনবার গোসল করাও, অথবা পাঁচবার অথবা সাতবার অথবা এর চাইতে অধিকবার- যদি তোমরা তা মনে কর”[বুখারী, অধ্যায়ঃ জানাযা, অনুচ্ছেদঃ মৃতকে পানি বরই পাতা দিয়ে গোসল দেয়া ওযু করানো হা/১২৫৩ মুসলিম, অধ্যায়ঃ জানাযা, অনুচ্ছেদঃ মৃতকে গোসল দেয়া, হা/৯৩৯]
তাছাড়া বিদায় হজ্জে আরাফা দিবসে জনৈক ব্যক্তি ইহরাম অবস্থায় বাহণ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু বরণ করলে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন
اغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْنِ  
তোমরা তাকে পানি বরই পাতা দ্বারা গোসল দাও এবং পরিহিত দুটি কাপড়েই কাফন পরাও”[বুখারী, অধ্যায়ঃ জানাযা, অনুচ্ছেদঃ ইহরামকারী মৃত ব্যক্তিকে কিভাবে কাফন পরাতে হয় হা/ ১২৬৭ মুসলিম, অধ্যায়ঃ হজ্জ, অনুচ্ছেদঃ ইহরামকারী মৃত্যুবরণ করলে কি করতে হবে হা/১২০৬]
বিদ্বানগণ বলেন, মৃত্যু ব্যক্তিকে গোসল করানো ফরয কিন্তু এটা জীবিতের সাথে সম্পর্কিত কেননা মৃত্যু বরণ করার কারণে উক্ত ব্যক্তির উপর শরীয়তের বাধ্যবাধকতা শেষ হয়ে গেছে তাই জীবিতদের উপর ফরয হচ্ছে, তাকে গোসল করিয়ে দাফন করা কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছেন

গোসলের ফরজ
গড়গড়া কুলি করা
. নাকে পানি দেয়া
. এরপর সারা দেহে পানি ঢালা

গোসলের আহকাম
যে কাজগুলোর জন্যে গোসল করা ফরজ
. কোন কারণে বীর্যপাত হলে
. পুরুষাংগের মাথা স্ত্রীঅংগে প্রবেশ করালে
. মহিলাদের হায়েজ হলে
. মহিলাদের নেফাজ হলে

গোসলের সুন্নত
) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গোসল করা
) ক্রম বজায় রাখা
) প্রথমে ওজু করা
) দু হাতের কবজী পর্যন্ত ধোয়া
) শরীর থেকে নাপাকী ঘষে দুর করা
) মেছওয়াক করা
) সারা দেহে তিন বার পানি ঢালা

গোসলের মুস্তাহাব সমূহ
) উচু স্থানে বসে পোসল করা যাতে পনি গড়িয়ে যায় গায়ে ছিটা না লাগে
) পানির অপচয় না করা
) বসে গোসল করা
) লোক সমাগম স্থানে গোসল না করা
) পাক জায়গায় গোসল করা
) ডান থেকে শুরু করা

ফরজ গোসলের মসনুন পদ্ধতি
. মনে মনে জানাবত (স্ত্রী-সঙ্গম, স্বপ্নদোষ,ঋতুস্রাব প্রসব ইত্যাদি নিমিত্ত যে নাপাকি) দূর করার নিয়ত করা
. শুরুতে লজ্জাস্থানে লেগে থাকা নাপাকি ধুয়ে ফেলা
. তারপর সাবান বা অনুরূপ কিছু দিয়ে হস্তদ্বয় ধৌত করা
. অতঃপর নামাজের অজুর ন্যায় পূর্ণাঙ্গ অজু করা
. এরপর পানি দিয়ে তিনবার মাথা ভিজানো
. তারপর প্রথমে শরীরের ডান অংশে এবং পরে বাম অংশে পানি ঢালা
. অতঃপর সারা দেহে পানি ঢালা
. গোসল শেষে এই দোয়া পড়া :
أَشْهَدُ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّه وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

No comments

Powered by Blogger.