যরূরী দো‘আ সমূহ
দো‘আর গুরুত্ব :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ ‘দো‘আ হ’ল ইবাদত’।
আল্লাহ বলেন,اُدْعُونِي
أَسْتَجِبْ لَكُمْ، إِنَّ الَّذِيْنَ يَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِيْ
سَيَدْخُلُوْنَ جَهَنَّمَ دَاخِرِيْنَ- (غافر60)-
‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। যারা অহংকার বশে আমার ইবাদত হ’তে বিমুখ হয়, সত্বর তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত অবস্থায়’। এখানে ‘ইবাদত’
অর্থ দো‘আ।
আল্লাহ আরও বলেন,
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي
فَإِنِّي قَرِيْبٌ أُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيْبُوْا
لِي وَلْيُؤْمِنُوْا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُوْنَ- (البقرة 186)-
‘আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে আমার বিষয়ে
জিজ্ঞেস করে, তখন বলে দাও যে, আমি তাদের অতীব নিকটবর্তী। আমি
আহবানকারীর আহবানে সাড়া দিয়ে থাকি,
যখন সে আমাকে আহবান করে। অতএব তারা যেন আমার আদেশ সমূহ
পালন করে এবং আমার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে। যাতে তারা সুপথ
প্রাপ্ত হয়’ (বাক্বারাহ ২/১৮৬)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ لَمْ يَدْعُ اللهَ سُبْحَانَهُ غَضِبَ عَلَيْهِ ‘যে ব্যক্তি মহান আল্লাহকে ডাকে না, তিনি তার উপরে ক্রুদ্ধ হন’।
তিনি বলেন, لَيْسَ شَىْءٌ أَكْرَمَ عَلَى
اللهِ سُبْحَانَهُ مِنَ الدُّعَاءِ ‘মহান আল্লাহর নিকট দো‘আর চাইতে অধিক মর্যাদাপূর্ণ বিষয় আর কিছু নেই’।
দো‘আর ফযীলত : হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,
‘মুসলমান যখন অন্য
কোন মুসলমানের জন্য দো‘আ করে,
যার মধ্যে কোনরূপ গোনাহ বা আত্মীয়তা ছিন্ন করার কথা থাকে না, আল্লাহ পাক উক্ত দো‘আর বিনিময়ে তাকে তিনটির যেকোন একটি দান করে থাকেন। (১)
তার দো‘আ দ্রুত কবুল করেন অথবা (২) তার প্রতিদান আখেরাতে প্রদান করার জন্য রেখে দেন অথবা (৩) তার
থেকে অনুরূপ আরেকটি কষ্ট দূর করে দেন। একথা শুনে ছাহাবীগণ উৎসাহিত
হয়ে বললেন, তাহ’লে আমরা বেশী বেশী দো‘আ করব। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আল্লাহ তার চাইতে আরও বেশী দো‘আ কবুলকারী’।এজন্য সর্বদা পরস্পরের নিকট দো‘আ চাইতে হবে।
দো‘আ কবুলের শর্তাবলী : (১) শুরুতে এবং শেষে হাম্দ ও দরূদ পাঠ করা
(২) দো‘আ আল্লাহর প্রতি খালেছ আনুগত্য সহকারে
হওয়া (৩) দো‘আয় কোন পাপের কথা কিংবা আত্মীয়তা ছিন্ন
করার কথা না থাকা (৪) খাদ্য-পানীয় ও পোষাক হালাল ও পবিত্র হওয়া (৫) দো‘আ কবুলের জন্য ব্যস্ত না হওয়া (৬) নিরাশ না হওয়া ও দো‘আ পরিত্যাগ না করা (৭) উদাসীনভাবে দো‘আ না করা এবং দো‘আ কবুলের ব্যাপারে সর্বদা দৃঢ় আশাবাদী থাকা।
তবে আল্লাহ ইচ্ছা করলে যে কোন সময় যে কোন বান্দার এমনকি কাফের-মুশরিকের দো‘আও কবুল করে থাকেন, যদি সে অনুতপ্ত হৃদয়ে ক্ষমা চায়।
নিয়ম :
খোলা দু’হস্ততালু একত্রিত করে চেহারা বরাবর সামনে রেখে দো‘আ করবে।দো‘আর শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপর দরূদ পাঠ করবে।
অতঃপর বিভিন্ন দো‘আ পড়বে। যেমন,আল-হামদু লিল্লা-হি রবিবল ‘আ-লামীন, ওয়াছছালাতু ওয়াসসালা-মু ‘আলা রাসূলিহিল কারীম’ বলার পর বিভিন্ন দো‘আ শেষে ‘সুবহা-না রবিবকা রবিবল ‘ইযযাতি ‘আম্মা ইয়াছিফূন, ওয়া সালা-মুন ‘আলাল মুরসালীন, ওয়াল হামদু লিল্লা-হি রবিবল ‘আ-লামীন’
পাঠ অন্তে দো‘আ শেষ করবে।
দো‘আর আদব : (১) কাকুতি-মিনতি সহকারে ও গোপনে হওয়া।
(২) একমনে ভয় ও
আকাংখা সহকারে এবং অনুচ্চ শব্দে অথবা মধ্যম স্বরে হওয়া। (৩) সারগর্ভ ও তাৎপর্যপূর্ণ হওয়া।
দো‘আ কবুলের স্থান ও সময় : আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব’। এতে বুঝা যায় যে, যে কোন স্থানে যে কোন
সময় যে কোন ভাষায়
আল্লাহকে ডাকলে তিনি সাড়া দিবেন। তবে ছালাতের মধ্যে আরবী ব্যতীত অন্য ভাষায় দো‘আ করা যাবে না। দো‘আর জন্য হাদীছে বিশেষ
কিছু স্থান ও
সময়ের ব্যাপারে তাকীদ এসেছে, যেগুলি সংক্ষেপে বর্ণিত হ’ল :
(১) কুরআনী দো‘আ ব্যতিরেকে হাদীছে বর্ণিত দো‘আ সমূহের মাধ্যমে সিজদায়
দো‘আ করা (২) শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে (৩) জুম‘আর দিনে ইমামের মিম্বরে বসা হ’তে সালাম ফিরানো পর্যন্ত সময়কালে (৪) রাত্রির নফল ছালাতে (৫)
ছিয়াম অবস্থায় (৬) রামাযানের ২১, ২৩,
২৫, ২৭ ও ২৯ বেজোড় রাত্রিগুলিতে (৭) ছাফা ও মারওয়া পাহাড়ে উঠে বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে দু’হাত উঠিয়ে (৮) হজ্জের সময় আরাফা ময়দানে দু’হাত উঠিয়ে (৯) মাশ‘আরুল হারাম অর্থাৎ মুযদালিফা মসজিদে অথবা
বাইরে স্বীয় অবস্থান স্থলে ১০ই যিলহাজ্জ ফজরের ছালাতের পর হ’তে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত দো‘আ করা (১০) ১১, ১২ ও ১৩ই যিলহাজ্জ তারিখে মিনায় ১ম ও ২য়
জামরায় কংকর নিক্ষেপের পর একটু দূরে সরে গিয়ে দু’হাত উঠিয়ে দো‘আ করা (১১) কা‘বাগৃহের ত্বাওয়াফের সময় রুকনে ইয়ামানী ও হাজারে আসওয়াদের মধ্যবর্তী
স্থানে। (১২)
‘কারু পিছনে খালেছ
মনে দো‘আ করলে,
সে দো‘আ কবুল হয়। সেখানে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকেন। যখনই ঐ ব্যক্তি তার ভাইয়ের জন্য দো‘আ করে,
তখনই উক্ত ফেরেশতা
‘আমীন’
বলেন এবং বলেন
তোমার জন্যও অনুরূপ হৌক’।
এতদ্ব্যতীত
অন্যান্য আরও কিছু স্থানে ও সময়ে।
তিন ব্যক্তির দো‘আ নিশ্চিত কবুল হয় :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তিন ব্যক্তির দো‘আ নিশ্চিতভাবে কবুল হয়, এতে কোন সন্দেহ নেই (১) মাযলূমের দো‘আ (২) মুসাফিরের দো‘আ (৩) সন্তানের জন্য পিতার
দো‘আ। তিনি বলেন,
‘ তোমরা মাযলূমের দো‘আ হ’তে সাবধান থাকো। কেননা তার দো‘আ ও আল্লাহর মধ্যে কোন পর্দা নেই’।
বিভিন্ন সময়ের দো‘আ সমূহ (الدعوات فى الأوقات)
১. শুভ কাজের শুরুতে : (ক) খানাপিনা সহ সকল শুভ কাজের শুরুতে বলবে- بِسْمِ اللهِ ‘বিসমিল্লা-হ’ (আল্লাহর নামে শুরু করছি)।
(খ) শেষে বলবে- اَلْحَمْدُ
ِللهِ ‘আলহামদুলিল্লা-হ’
(যাবতীয় প্রশংসা
আল্লাহর জন্য)।
(গ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা বিসমিল্লাহ বল, যখন তোমরা দরজা-জানালা বন্ধ কর অথবা কোন
খাদ্য ও পানীয়ের পাত্রে ঢাকনা দাও। যদি ঢাকনা দেওয়ার কিছু না পাও, তাহ’লে পাত্রের উপর কোন কাঠি বা কাষ্ঠখন্ড
রেখে দাও। যার ফলে তা অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ থাকবে।
উল্লেখ্য যে, কোন অন্যায় কাজের শুরুতে ও শেষে ‘বিসমিল্লাহ’ ও ‘আলহামদু লিল্লা-হ’ বলা যাবে না বা আল্লাহর সাহায্য চাওয়া যাবে না। কেননা এগুলি শয়তানের কাজ। আর আল্লাহর অনুগ্রহ কেবল ন্যায় ও সৎ
কাজের সাথে থাকে।
২. (ক)
মঙ্গলজনক কিছু
দেখলে বা শুনলে বলবে, اَلْحَمْدُ
ِللهِ ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ (খ)
পসন্দনীয় কিছু
দেখলে বা শুনলে বলবে,اَلْحَمْدُ
ِللهِ الَّذِيْ بِنِعْمَتِهِ تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ ‘আলহামদুলিল্লা-হিল্লাযী বিনি‘মাতিহি তাতিম্মুছ ছা-লিহা-ত’ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যার অনুগ্রহে সকল শুভ কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে)। (গ) অপসন্দনীয় কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে,
اَلْحَمْدُ للهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ ‘আলহামদুলিল্লা-হি ‘আলা কুল্লে হা-ল’ (সর্বাবস্থায় আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা)। (ঘ) বিস্ময়কর কিছু দেখলে বা শুনলে বলবে, سُبْحَانَ اللهِ ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ (মহাপবিত্র তুমি হে আল্লাহ!)।
অথবা বলবে,اَللهُ أَكْبَرُ ‘আল্লা-হু আকবার’
(আল্লাহ সবার চেয়ে
বড়)। (ঙ) ভয়ের কারণ ঘটলে বলবে, لآ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ ‘লা ইলা-হা
ইল্লাল্লা-হ’ (আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন যে, سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ ِللهِ
‘সুবহা-নাল্লা-হি
ওয়ালহামদুলিল্লা-হ’ এ দু’টি বাক্য আসমান ও যমীনের মধ্যের ফাঁকা
স্থানকে ছওয়াবে পূর্ণ করে দেয়।
اَلْحَمْدُ ِِللهِ ‘আলহামদুলিল্লা-হ’
মীযানের পাল্লাকে
ছওয়াবে পরিপূর্ণ করে দেয়।
৩.
দুঃখজনক কিছু
দেখলে, ঘটলে বা শুনলে বলবে, (ক)
إِنَّا ِللهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ
رَاجِعُوْنَ ‘ইন্না লিল্লা-হে ওয়া ইন্না ইলাইহে রা-জে’উন’ (আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই
তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী)।
(খ) অতঃপর নিজের ব্যাপারে হ’লে বলবে,
اَللَّهُمَّ أَجِرْنِيْ فِيْ مُصِيْبَتِيْ وَأَخْلِفْ
لِيْ خَيْرًا مِّنْهَا-
‘আল্লা-হুম্মা আজিরনী ফী মুছীবাতী ওয়া
আখলিফলী খায়রাম মিনহা’ (হে আল্লাহ! এই বিপদে তুমি আমাকে আশ্রয়
দাও এবং আমাকে এর উত্তম বিনিময় দান কর)।যদি বিপদ সর্বাত্মক হয়, তাহ’লে ‘নী’
(نِىْ)-এর স্থলে ‘না’
(نَا) বলবে।
৪. হাঁচি বিষয়ে :
(ক) হাঁচি দিলে বলবে, اَلْحَمْدُ
ِللهِ ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ (আল্লাহর জন্য যাবতীয় প্রশংসা
=বুখারী)।
অথবা বলবে,
اَلْحَمْدُ ِللهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ ‘আলহামদুলিল্লা-হি রবিবল ‘আ-লামীন’ (বিশ্বচরাচরের পালনকর্তা আল্লাহর জন্য
যাবতীয় প্রশংসা)। অথবা
বলবে, اَلْحَمْدُ ِللهِ عَلَى كُلِّ
حَالٍ ‘আলহামদুলিল্লা-হি ‘আলা কুল্লে হা-ল’ (সর্বাবস্থায় আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা)।
(খ) হাঁচির জবাবে বলবে,
يَرْحَمُكَ اللهُ ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ (আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন)।
(গ) হাঁচির জবাব শুনে বলবে,
يَهْدِيْكُمُ اللهُ وَيُصْلِحُ بَالَكُمْ ‘ইয়াহদীকুমুল্লা-হু ওয়া ইউছলিহু বা-লাকুম’ (আল্লাহ আপনাকে (বা আপনাদেরকে) হেদায়াত করুন এবং আপনার (বা
আপনাদের) সংশোধন করুন)।অথবা
বলবে, يَغْفِرُ اللهُ لِىْ وَلَكُمْ ‘ইয়াগফিরুল্লা-হু লী ওয়া লাকুম’ (আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে (বা আপনাদেরকে) ক্ষমা করুন)।
(ঘ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
যদি কেউ হাঁচির
পরে ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ না বলে, তাহ’লে তুমি তাকে ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ বলো না।
(ঙ) যদি কোন অমুসলিম হাঁচি দেয়, তখন কোন মুসলিম তাকে ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ বলবে না। কেবল তাকে ‘ ইয়াহদীকুমুল্লা-হু ওয়া ইউছলিহু বা-লাকুম’ বলবে।
(চ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ হাঁচি পসন্দ করেন এবং হাই তোলা
অপসন্দ করেন। অতএব তোমাদের কেউ যখন হাঁচি দেয় এবং ‘আলহামদুলিল্লা-হ’ বলে, তখন যে মুসলিম তা শুনে, তার উপরে কর্তব্য হয়ে যায় ঐ ব্যক্তির
উদ্দেশ্যে ‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ বলে দো‘আ করা। তিনি বলেন, হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। অতএব
যখন তোমাদের কেউ
হাই তোলে, তখন সে যেন সাধ্যপক্ষে তা চাপা দেয়।
কেননা তোমাদের কেউ হাই তুললে ও ‘হা’ করে মুখ খুলে শব্দ করলে শয়তান হাসে। তিনি একথাও বলেছেন যে,
তোমাদের যখন হাই
আসে, তখন মুখে হাত দিয়ে তা চেপে রাখবে। নইলে
শয়তান সেখানে ঢুকে পড়বে।
(ছ) ছালাতের মধ্যে হাঁচি আসলে
‘আলহামদুলিল্লা-হ’ বলা যাবে। কিন্তু তার জওয়াবে মুখে
‘ইয়ারহামুকাল্লা-হ’ বলা যাবে না।
৫. সম্ভাষণ বিষয়ে :
ইসলামে সম্ভাষণ রীতি হ’ল পরস্পরকে সালাম করা। ‘সালাম’ অর্থ
‘শান্তি’। আল্লাহর অপর নাম ‘সালাম’। জান্নাতকে বলা হয় ‘দারুস সালাম’ (শান্তির গৃহ)। ইসলাম শব্দের মাদ্দাহ হ’ল ‘সালাম’। ইসলামের অনুসারীকে বলা হয় মুসলিম বা
মুসলমান। অতএব মুসলমানের জীবন ও সমাজ ‘সালাম’ তথা শান্তি দ্বারা পূর্ণ। তার জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হ’ল পরকালে দারুস সালামে প্রবেশ করা। অতএব
মুসলিম সমাজে কেবলই থাকে সালাম আর সালাম অর্থাৎ শান্তি আর শান্তি।
এই সম্ভাষণ দ্বারা মুসলমান তার
পক্ষ হ’তে আগন্তুক ব্যক্তিকে শান্তি ও নিরাপত্তার
নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা বেশী বেশী সালাম কর। চেনা-অচেনা সবাইকে সালাম কর। আরোহী পায়ে হাঁটা লোককে
সালাম দিবে। কম সংখ্যক লোক অধিক
সংখ্যক লোককে
সালাম দিবে। ছোটরা বড়দের সালাম দিবে। দলের পক্ষ
থেকে একজন সালাম বা সালামের জবাব দিলে চলবে।কোন গাছ, দেওয়াল বা পাথরের আড়াল পেরিয়ে দেখা হ’লে পুনরায় পরস্পরে সালাম দিবে।
কোন মজলিসে
প্রবেশকালে ও বসার সময় এবং উঠে
যাওয়ার সময় সালাম
দিবে। তিনি বলেন,
আল্লাহর নিকটে
সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি, যিনি প্রথমে সালাম দেন’। কোন সম্মানী ব্যক্তিকে এগিয়ে গিয়ে
অভ্যর্থনা জানানো মুস্তাহাব।
No comments